গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়াল
- By Jamini Roy --
- 22 November, 2024
ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের ফলে গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এপি এবং সিএনএন একাধিক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ১৩ মাস ধরে চলা সংঘাতে ৪৪ হাজার ৫৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১ লাখ ৪ হাজার ২৬৮ জন আহত হয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। অনেক মৃতদেহ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা এসব জায়গায় প্রবেশ করতে পারছেন না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হতাহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। যদিও ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ১৭ হাজারের বেশি ‘জঙ্গিকে’ হত্যা করেছে। তবে তারা এ দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
বুধবার মধ্য গাজার শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি বাড়িতে হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১০ জন শিশু ছিল বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক ড. হোসাম আবু সাফিয়া জানান, উত্তর গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৬৫ জন নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, "রাতভর চলা হামলার সময় হাসপাতালের কাছে ২০০ জনের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আমাদের টিম ৬৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।"
তিনি আরও জানান, উদ্ধার কাজ করতে হচ্ছে হাতে, কারণ আধুনিক সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, "যদি আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম না আসে, তাহলে হাসপাতালটি গণকবরে পরিণত হতে পারে।"
ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে তাদের অভিযান জোরদার করেছে। নতুন করে শুরু হওয়া বিমান হামলায় আরও অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ড. মুনির আলবুরশ জানান, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হতাহতদের উদ্ধারের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, "গাজায় একের পর এক বিমান হামলায় আমাদের উদ্ধারকর্মীরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। আমরা হাতে গোনা কিছু সরঞ্জাম দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।"
গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় ক্রমশ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, দ্রুত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাদ্য সহায়তা না পৌঁছালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
এই সংঘর্ষে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে তাদের অভিযানের তীব্রতায় গাজায় বেসামরিক প্রাণহানি উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।
বিশ্বের নজর এখন গাজার ভয়াবহ মানবিক সংকটের দিকে। অনেকে বলছেন, এই অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ছাড়া সংঘর্ষের সমাপ্তি সম্ভব নয়।